জেলা প্রতিনিধি, ফরিদপুর: ফরিদপুরে হঠাৎ বেড়েছে ‘চোখ ওঠা’ রোগ। সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হচ্ছেন এ রোগে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি।
কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মাদ্রাসায় রোগটির প্রভাব বেশি হওয়ায় ইতোমধ্যেই শহরের একটি মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানিয়েছে, শহরের আদমপুর মাদ্রাসা ও এতিমখানায় একই সঙ্গে শতাধিক শিক্ষার্থী ‘চোখ ওঠা’ রোগে আক্রান্ত হলে বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানটির ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়া শহরের আলীপুরে অবস্থিত সালমান ফারসি (রা.) মাদ্রাসা ও এতিমখানার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্ররা কোরআন শিক্ষা নিচ্ছিল। এমন সময় একসঙ্গে ১৫ শিক্ষার্থী চোখে ব্যথা অনুভব করে। চোখ পুরো লাল হয়ে যায়। তাদের তখনই নিরাপদ স্থানে পাঠানো হয়।’
এদিকে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে সকাল থেকে তিন শতাধিক ‘চোখ ওঠা’ রোগী এসে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলার সব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই এভাবে ‘চোখ ওঠা’ রোগীদের ঢল নেমেছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তানসিভ জুবায়ের।
তিনি জানান, বেশির ভাগ আক্রান্তই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ রোগের উপসর্গ সাধারণত তিন দিন পর্যন্ত থাকে।
তবে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে রোগীদের নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান।
সিভিল সার্জন বলেন, ‘সারা দেশের মতো ফরিদপুরেও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে চোখ ওঠা রোগ। এটি ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হয়ে থাকে। এটি ছোঁয়াচে হওয়ায় সংক্রমণের হার বাড়ছে।’
‘চোখ ওঠা’ রোগীদের জন্য সিলিভ সার্জন পরামর্শ দেন- এ রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই অন্যদের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং আলাদা ও পরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এক চোখ আক্রান্ত হলে অন্য চোখ যেন আক্রান্ত না হয়- সে জন্য হাত ব্যবহার করা যাবে না। ভালো চোখে যেন কোনোভাবেই আক্রান্ত চোখের কোনো কিছুর স্পর্শ না লাগে।
এ ছাড়া আক্রান্তদের কম আলোতে থাকার পাশাপাশি চিকিৎসকের নির্দেশনায় চোখের ড্রপ ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান।